নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাকালীন সময়ে মাদকের ভয়াবাহ বিস্তার বেড়েছে বান্দরবান-কক্সবাজার সীমান্তবর্তী এলাকায় বিশেষ করে বাইশারী-গর্জনিয়া দুই ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান উত্তর বড়বিল জারাইল্ল্যাঝিরি নামক যায়গায়টি মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা হয়ে উঠেছে।
সেখানে একাধিক আস্তানায় ইয়াবা, মদ, পেন্সিডেলের ঘাটির সন্ধান মিলেছে তবে মুখ খুলার সাহস কারো নেই।
জানাগেছে এসব নিয়ন্ত্রণ করছে ভয়ংকর সন্ত্রাসী (জালাল উদ্দিন) প্রকাশ রইব্বা ও তার ভাই শীর্ষ ডাকাত জুনাইদ।
গোপন সুত্রে জানা গেছে, নতুন আরো একটি আস্তানা তৈরি করেছে জোয়ারিনালার পুর্বে বাইশারীর পশ্চিমে গহীন জঙ্গলে বাককল নামক এলাকায়, এই আস্তানা ব্যবহার করে বড় অপরাধ সংঘটিত করে পাশাপাশি অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্যও ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা।
গত ১৭ তারিখ দিবাগত রাতে বাককলের পার্শে মিতারছড়া নামক স্থান থেকে আন্ধাইয়া নামক এক ব্যক্তিকে অপহরণ করার খবরও পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, (জালাল উদ্দিন) প্রকাশ রবি আর জুনাইদ এরা দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে মাদক ব্যবসার পাশাপাশি গুম, খুন, অপহরণ সহ বিভিন্ন ভয়ঙ্কর অপরাধ সংঘটিত হয়ে আসছে।
সাম্প্রতিক তাদের মাদকের ব্যবসা বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ নুরুল আবছারের ছেলে তরুণ ইউটিবার ছরওয়ারকে এলোপাথাড়ি কুপিয়েছে তারা, এ ঘটনায় মামলা হলেও সন্ত্রাসীদের হুমির মুখে এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।
এই মাদক ব্যবসার বিস্তার নিয়ে ২০১৪ইং সালের আগস্ট মাষে ইলিয়াস (২৮) এবং আব্দুর রহিম (২৯) কে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এই হত্যার মিশনে সরাসরি জড়িত এই রইব্বা ডাকাত এবং তাদের বাহিনী তাদের মধ্যে অনেকেই জেল খেটেছে রইব্বা ডাকাত এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
খুন করে এলাকা ছেড়ে প্রায় চার বছর চট্টগ্রামে আত্মগোপনে চলে যায়, সেই সুবাদে চট্টগ্রামের বাইজীদ এলাকার এক পুলিশ কর্মকর্তার শিশু সন্তান অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি করে পরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে শিশুটি উদ্ধার হয়।
সর্বশেষ রইব্বা ডাকাত চার বছর পর এলাকায় এসে নিজেদের সন্ত্রাস বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করে তুলে এখন এলাকা চলে তাদের দুই ভাইয়ের রাজত্বে, তাদের শেল্টারদাতা এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে দির্ঘদিন ধরে স্থানীয় দুই একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি।
বাইজীদ থানায় দায়েরকৃত অপহরণ মামলার প্রধান আসামী রইব্বা ডাকাত চট্টগ্রামে থাকাকালে ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্টও বানিয়ে ফেলে এই সন্ত্রাসী যেকোন মুহুর্তে বিদেশে পাড়ি জমাতে পারে বলে বিশেষ সুত্রে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, ভয়ংকর সন্ত্রাসী জালাল উদ্দিন প্রকাশ রইব্বার নামে বিভিন্ন থানায় হত্যা, অপহরণ, ডাকাতিসহ ৯টি মামলা রয়েছে, যথাক্রমে দায়েরকৃত যার মামলা নং-জি আর ২০৬/ জি আরঃ ৯০/১৩/ জি আরঃ ১২৮/জি আরঃ ০৫/৩/জি আরঃ ১১২ /রামু থানায় দায়েরকৃত ১৮/২৬২/ জি আর ১০৯/ধারা/১৯/এ
জি আরঃ /১০৮/ধারা/৩৯৯/৪০২/
জি আরঃ ৫৫/২০৪/ চট্টগ্রাম বাইজীদ থানায় দায়েরকৃত অপহরণ মামলা চার্জশীট দাখিল ৩১২/ ২৭/১১/২০১৪ইং
এ ছাড়া তার ভাই শীর্ষ ডাকাত জুনাইদ প্রকাশ জুনু পুলিশের সাথে এক ঘন্টা বন্দুক যুদ্ধ করে জারাইল্ল্যাঝিরি থেকে গ্রেপ্তার হয়ে ৩বছর সাজা খেটে বের হয়ে আবার নতুন করে অপরাধ শুরু করে। তার নামে ফরেস্ট সহ ৯টি মামলা রয়েছে যার নং জি আর ১০৯/ ধারা ১৯/এ, জি আর ১০৮/ ধারা ৩৯৮/৪০২/ জি আর ১০৭/ জি আরঃ ৫৫/২০৪/ এছাড়া নাইক্ষংছড়ী ও রামু থানায় ৪ এর অধিক মামলা রয়েছে এরপরও তারা বরাবরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাগালের বাইরে রয়েছে, এ কারনে তারা আরো বেশি বেপরো হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বড়বিল ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ওয়ার্ড আওয়ালী’লীগ সভাপতি ইসলাইল, ভুক্তভোগী সমাজ সেবক আব্বাস ও আব্দুশুক্কুর, এবং সাধারণ মানুষের দাবি সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে শত শত সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও এই ভয়ংকর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এই অপারধীদের গ্রেপ্তার করে কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনা দরকার বলে মনে করেন তারা।
এই বিষয়ে জানতে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল খাইর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য মামলা রয়েছে যেকোন মুহুর্তে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
রবিউল এবং জুনাইদ দুই সহোদর বান্দরবান বাইশারী ইউনিয়নের মঘেরখিল বাদশা মিয়ার ছেলে বলে যানা গেছে।
Leave a Reply