সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন
ইমরান হোসাইন, পেকুয়া
পেকুয়ায় ছয়টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র সংস্কারে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। সুষ্ঠু তদারকি না থাকায় নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে যেনতেন এ সংস্কারকাজ চালানো হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই এই সংস্কারকাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব বাজেটের আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশের উপকূলীয় এলাকার ৮৪টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র সংস্কারের জন্য ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৬৪ হাজার ৭৮৯ টাকা বরাদ্দ দেয়। এতে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বুধামাঝির ঘোনা আশ্রয়ণ কেন্দ্র, উজানটিয়া ইউনিয়নের জালিয়া পাড়া আশ্রয়ণ কেন্দ্র, পূর্ব উজানটিয়া আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও মগনামা ইউনিয়নের শরৎ ঘোনা আশ্রয়ণ কেন্দ্র, সিকদার পাড়া আশ্রয়ণ কেন্দ্র এবং হারুন মাতবর পাড়া আশ্রয়ণ কেন্দ্র সংস্কারের কার্যাদেশ পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজল এন্ড ব্রাদার্স ও সীমা কনস্ট্রাকশন। এ ছয়টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রতিটি সংস্কারের জন্য প্রায় ৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আমিনুল ইসলামের যোগসাজশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে সংস্কারকাজ চালাচ্ছে। এনিয়ে কেউ কথা বললে, তাদের হুমকি দিচ্ছে সংস্কারকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা।
উজানটিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে উজানটিয়া ইউনিয়নের ঠান্ডার পাড়া আশ্রয়ণ কেন্দ্র সংস্কারকাজ শুরু করে কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে তাঁরা যেনতেনভাবে কাজ শেষ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এবিষয়ে পিআইও অফিসকে জানানোর পরেও তাঁরা দৃশ্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এটি সংস্কারে পাঁচ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ থাকলে যথাযথভাবে কাজ করা হচ্ছে না। বেশিরভাগ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।
উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সংস্কারকাজ করার অভিযোগ আমি শুনেছি। বিষয়টি দেখার জন্য আমি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছি।
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম বলেন, মগনামার তিনটি আশ্রয়ণ কেন্দ্রেই নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার ও যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংস্কারকাজ না করায় আমি এ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও গুণগত মানসম্পন্ন উপকরণ দিয়ে সংস্কারকাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদার জয়নাল উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে সংস্কারকাজে অনিয়মের সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, যেখান থেকে অনিয়মের অভিযোগ আসছে সেখানে আমরা পরিদর্শনে যাচ্ছি। গতকালও উজানটিয়ার সংস্কারকাজে আমার অফিসের স্টাফ পাঠিয়েছি। আমি কোন অনিয়মকে ছাড় দেব না।