রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যাচারের জবাব দিলেন যুবদল নেতা জাবেদ ইকবাল লবণ আমদানির চক্রান্ত রুখতে হবে বিসিক কক্সবাজারে পাঁচদিনব্যাপী শিল্পোদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র ভর্তি ফি’তে ৫০ শতাংশ ছাড়সহ শতভাগ স্কলারশিপ প্রকাশিত সংবাদে আহমদ কবিরের প্রতিবাদ অবসরপ্রাপ্ত সেক্রেটারি রশিদ আহমদের চিংড়ি প্রজেক্ট জবরদখলের অভিযোগ কক্সবাজার শহরে তারেক বাহিনী সক্রিয়, সশস্ত্র মহড়া ভারুয়াখালীতে চিংড়ি প্রজেক্ট দখলে নিতে সশস্ত্র হামলায় আহত ২, লুটপাট ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি স্বেচ্ছাসেবক দল ফতেখারকুল শাখার ৭ সদস্যের কমিটি অনুমোদন

জেলা পর্যায়ে সাংবাদিকতা

বার্তা কক্ষ / ৩৫৬ বার পড়ছে
আপলোড : রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন

মোয়াজ্জেম হোসাইন সাকিল:
এক সময় আমি ঢাকায় সাংবাদিকতা করলেও ২০০৫ সালের দিকে The Daily Star এর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কক্সবাজার চলে আসি। তখনও পত্রিকাটি সর্বোচ্চ বেতন দিত। এরপরও মাস শেষে আমার কোন টাকা জমা থাকতনা। তাই বিকল্প আয়ের সুযোগ খুঁজতাম। পত্রিকাটির এক সহকর্মীর সহযোগিতায় বিদেশী একটি মিডিয়ায় ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করেছিলাম ২০০৬ এ। সেই থেকে ফ্রিল্যান্সিং এবং ডলারের দেখা। বিবিসি থেকে শুরু করে বড় অনেক মিডিয়ার সাথে কাজ করেছি। এখনও করে যাচ্ছি। এখনও সর্বোচ্চ বেতন দেয় সেরকম প্রতিষ্টানে কাজ করি।
এরপরও জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকতা নিয়ে আমার যথেষ্ট শংকা কাজ করছে। আমার মনে হচ্ছে- ভবিষ্যতে গতানুগতিক সাংবাদিকতার জন্য হয়তো খুব খারাপ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। অন্তত জেলা পর্যায়ে। কক্সবাজারের সাংবাদিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি বেশ উদ্বিগ্ন। জীবনের একটি পর্যায়ে গিয়ে বড় ধরণের ধাক্কা খেতে হতে পারে আমাদের। তাই সৎভাবে চলার জন্য বিকল্প বৈধ আয়ের উৎস অবশ্যই রাখতে হবে।
করোনা পরবর্তী অনেক কিছুই বদলে যাবে নিশ্চিত। তাই আমি নিজেকে নতুন কাজের জন্য প্রস্তুত করার চেষ্টাও চালাচ্ছি।
যদিও বা ফ্রিল্যান্সিংএ আমার প্রতি মাসে লাখ টাকার উপরে আয় হয় বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই। এরপরও নিজেকে সময়ের সাথে আপডেট করতে না পারলে, হারিয়ে যাব- তা অনুমেয়।
কক্সবাজার থেকে যারা বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলি- কিছু কিছু জাতীয় পত্রিকা প্রথমে বকেয়া রাখবে। পরে ছাটাই করবে। একসময় স্বয়ং প্রতিষ্টানই গুটিয়ে যাবে। এটা ২/৩ বছরের মধ্যেই ঘটতে পারে। কেবল বড় বড় কর্পোরেট হাউজগুলোর পত্রিকাগুলো হয়তো টিকে থাকবে।
তাহলে নেশার এই পেশা নিয়ে কি হবে? জি। আমি সেটা নিয়েই কথা বলছি আজ।
আপনাদের বুঝার জন্য আমি নিজের পরিকল্পনার কথা শেয়ার করতে পারি-
আমি নিজেকে Multimedia content creator হিসেবে প্রস্তুত করতে যাচ্ছি। হয়তো আগামী ২/৩ বছর পর নিজের ভেতর ওই যোগ্যতা অর্জন করতে পারব। এই কাজে মাসিক বেতন এই মুহুর্তে ৫ লাখ টাকার উপরে। তখন আরও বাড়বে।
আমি চাইলে বর্তমান কাজগুলো চালু রেখেও তখন Multimedia content creator হিসেবে কাজ করতে পারবো। ঘরে বসেই; দেশে বিদেশে। কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে- আমি এখন যেসব প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছি, ওইসব প্রতিষ্ঠান হয়তো তখন আমাকে নতুন করে Multimedia content creator হিসেবেই হায়ার করবে। কারণ ততদিনে অনেক পরিবর্তন আনতে হবে প্রতিষ্টানগুলোকে। সময়ের সাথে যেসব প্রতিষ্ঠান বদলাতে পারবেনা, তাদের হয়তো পিছিয়ে পড়তে হবে।
আপনিও আপনার জন্য চিন্তা করুন। সাংবাদিকতার পরিবর্তনটা ধরার চেষ্টা করুন। একটু পড়াশুনা করুন। নিজেকে আপগ্রেড করুন। সময়ের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকুন।
আমি কেবল পেশাদার সাংবাদিকদের জন্যই এটি লিখেছি। আমার মতো যারা পারিশ্রমিকের বাইরে এক টাকাও অবৈধ আয় করেন না, কেবল তাদের জন্যই আমার চিন্তা।
এরবাইরে অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য এখানে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
এক সময় নতুনদের ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ধারণা দিতে আমি অনেকগুলো ফ্রি ক্লাস করাতাম। এই কাজটি করার জন্য কক্সবাজার অনলাইন কমিউনিটি গঠন করেছিলাম। সেখান থেকে বেশ কিছু ফ্রিল্যান্সার উঠে এসেছে। অনেকেই বিভিন্ন পেশায় প্রবেশ করেছেন। সেখানেও আশা করি তাদের ফ্রিল্যান্সিং এর জ্ঞান কাজে লাগবে।
এখন মনে হচ্ছে কক্সবাজার মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি গঠন করে অভিজ্ঞতা শেয়ার করা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে।
রোহিঙ্গা রেসপন্সে কক্সবাজারের সাংবাদিকরা যে ভূমিকা রেখেছেন, সেই কারণে আন্তর্জাতিক কমিউনিউটির উচিত কক্সবাজারের মিডিয়া ডেভেলপমেন্টের জন্য বরাদ্দ দেয়া। কিন্তু বিপদ হচ্ছে- সাংবাদিকতদের জন্য কিছু করতে গেলেই বিপদ। তাই জেনেশুনে কেউ এতো কঠিন প্রজেক্টে হয়তো হাত দিতে চাইবে না।
তাই স্বপ্নবাজ এবং সৎ সাংবাদিকদের উচিত নিজ উদ্যোগে নিজেকে সময়ের সাথে আপডেট রাখা।
আসুন, নিজের জন্য চিন্তা করি, সৎভাবে জীবন যাপনের পথ খুলে রাখি।

মোয়াজ্জেম হোসাইন সাকিল
বাংলাদেশের একাধিক রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ।
বর্তমানে তিনি ভয়েস অফ আমেরিকা ও এটিএন বাংলায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত।