রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৩ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যাচারের জবাব দিলেন যুবদল নেতা জাবেদ ইকবাল লবণ আমদানির চক্রান্ত রুখতে হবে বিসিক কক্সবাজারে পাঁচদিনব্যাপী শিল্পোদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র ভর্তি ফি’তে ৫০ শতাংশ ছাড়সহ শতভাগ স্কলারশিপ প্রকাশিত সংবাদে আহমদ কবিরের প্রতিবাদ অবসরপ্রাপ্ত সেক্রেটারি রশিদ আহমদের চিংড়ি প্রজেক্ট জবরদখলের অভিযোগ কক্সবাজার শহরে তারেক বাহিনী সক্রিয়, সশস্ত্র মহড়া ভারুয়াখালীতে চিংড়ি প্রজেক্ট দখলে নিতে সশস্ত্র হামলায় আহত ২, লুটপাট ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি স্বেচ্ছাসেবক দল ফতেখারকুল শাখার ৭ সদস্যের কমিটি অনুমোদন

ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ফিরলো রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল

বার্তা কক্ষ / ২২৪ বার পড়ছে
আপলোড : রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৫৩ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নোয়াখালীর হাতিয়া ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ক্যাম্পে ফিরেছে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার ফিরে উখিয়ায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে।
ভাসানচর পরিদর্শন শেষে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, তারা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নির্মিত ঘর, মসজিদ, সাইক্লোন সেল্টার সহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। সেখানকার মনোমুগ্ধকর সবকিছুই তাদের কাছে ভালো লেগেছে। তারা নিজেদের চোখে দেখে আসা ভাসানচরের বর্ণনা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের কাছে শুনাবেন। তাদের কথায় ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাতে পারে বলে ধারণা প্রতিনিধি দলের সদস্যদের।
ভাসানচর পরিদর্শনে যাওয়া রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সদস্য ও টেকনাফের জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ নুর বলেন, আমরা গত শনিবার ভাসানচরে পৌঁছানোর পর থেকে সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মাণ করা ঘরসহ সবকিছুই দেখেছি। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সরকার যে ব্যবস্থা করেছে তা দেখে মনে হয়েছে রোহিঙ্গারা এখানে অনেক আরাম আয়েশে থাকতে পারবে। সেখানে না যাওয়ার আগে ভাসানচর সম্পর্কে অন্যান্য রোহিঙ্গাদের মতো আমাদেরও ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু সব কিছু নিজের চোখে দেখে এখন ভুল ভেঙে গেছে।
লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মোস্তফা কামাল বলেন, ভাসানচরের অনেক কিছুই আমাদের মুগ্ধ করেছে। পরিদর্শনে যাওয়ার আগে ভাসানচরে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেও এখন তা মনে হচ্ছেনা। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় সেখানে ঝড় জ্বলোচ্ছাস থেকে রক্ষার জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ এবং আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। আমাদের মনে হয়নি ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য কোনভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
প্রতিনিধি দলের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাস উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাসের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত হবে। এখানকার মতো ভাসানচরে ডাকাতি ও অপহরণের কোন ভয় থাকবেনা। নিরাপত্তার দিক থেকেও ভাসানচর রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক বেশি ভালো হবে। তবে এরপরও আমার মনে হচ্ছেনা সাধারণ রোহিঙ্গাদের এসব শুনিয়ে ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারব কিনা।
উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যুবক মো. তৈয়ব বলেন, আমাদের রোহিঙ্গা নেতারা ভাসানচর দেখে আজ (মঙ্গলবার) ফিরেছে। আমরা তাদের কাছ থেকে সেখানকার পরিবেশ, স্থাপনাসহ সব বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো। এমনিতে প্রতিনিধি দল সেখানে যাওয়ার পর থেকে ভাসানচর সম্পর্কে তাদের কাছে অনেক ইতিবাচক কথা শুনেছি। এবার রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাবে বলে মনে করছি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা বলেন, প্রতিনিধি দলে নারী সদস্যসহ বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা ছিল। ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের নেতিবাচক ধারণা দূর করতে নিজের চোখে দেখার জন্য তাদের সেখানে নেয়া হয়েছে। পরিদর্শন শেষে তারা আজ (মঙ্গলবার) ফিরেছে। তারা নিজ নিজ ক্যাম্পে ফিরে অন্য রোহিঙ্গাদের বুঝালে তারাও ভাসানচরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় এগারো লাখ রোহিঙ্গার ঠাঁই হয়েছিল কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে। সেখানে ৩৪ টি ক্যাম্পে ঠাঁসাঠাঁসি করে বসবাস করা রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের নানা ভুল ধারণার কারণে তারা সেখানে যেতে বিভিন্ন সময়ে অনাগ্রহ দেখিয়েছিল। মুলতঃ তাদের নেতিবাচক ধারণা পাল্টাতে রোহিঙ্গাদের ৪০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে গত শনিবার ভাসানচর পরিদর্শনে নেয় সরকার। পরিদর্শন শেষে তারা মঙ্গলবার ক্যাম্পে পৌঁছায়।