সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যাচারের জবাব দিলেন যুবদল নেতা জাবেদ ইকবাল লবণ আমদানির চক্রান্ত রুখতে হবে বিসিক কক্সবাজারে পাঁচদিনব্যাপী শিল্পোদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র ভর্তি ফি’তে ৫০ শতাংশ ছাড়সহ শতভাগ স্কলারশিপ প্রকাশিত সংবাদে আহমদ কবিরের প্রতিবাদ অবসরপ্রাপ্ত সেক্রেটারি রশিদ আহমদের চিংড়ি প্রজেক্ট জবরদখলের অভিযোগ কক্সবাজার শহরে তারেক বাহিনী সক্রিয়, সশস্ত্র মহড়া ভারুয়াখালীতে চিংড়ি প্রজেক্ট দখলে নিতে সশস্ত্র হামলায় আহত ২, লুটপাট ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি স্বেচ্ছাসেবক দল ফতেখারকুল শাখার ৭ সদস্যের কমিটি অনুমোদন

রেলের কাজে গতি নাই

বার্তা কক্ষ / ২৭১ বার পড়ছে
আপলোড : সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন

আতিকুর রহমান মানিকঃ
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত পর্যটন নগরী কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২৮ কিলোমিটার রেল লাইন প্রকল্পের কাজ চলছে খুব ধীর গতিতে। করোনা ও বর্ষার কারণে আরো মন্থর অবস্থা।
দীর্ঘদিন থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার অর্ধকোটি মানুষ স্বপ্ন দেখছিল এ রেললাইন নির্মাণের। সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলেও কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে যথাসময়ে রেললাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ তাদের।
প্রায় দুই বছর আগে রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল।
ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে প্রায় ৪১ শতাংশ কাজ। এর বেশীরভাগ কাজই হয়েছে কক্সবাজার অংশে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংকট ও বৃষ্টির এবং বৃষ্টির কারনে বহুল প্রতীক্ষিত চট্টগ্রাম দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ দীর্ঘায়িত হতে পারে। বর্তমানে প্রকল্পের ৪১ শতাংশ কাজ শেষ হলেও করোনা পরিস্থিতির সাথে যুক্ত হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত। এই কারনে কাজে এসেছে ধীরগতি। এমনটিই জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রকল্পের প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত জমি প্রকল্প পরিচালক বুঝে পেলেও ১ কিলোমিটার এলাকায় ঘর-বাড়ি থাকায় বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার অংশে স্বাভাবিক গতিতে কাজ চললেও পদে পদে বাধা চট্টগ্রাম অংশে। কাজও বেশি হয়েছে কক্সবাজার অংশে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমি অধিগ্রহণ করে তা প্রকল্প পরিচালককে বুঝিয়ে দেয়া হলেও কাজ করতে গেলে স্থানীয় লোকজন দলবল নিয়ে এসে বলেন-আমরা ভূমি অধিগ্রহনের টাকা পাইনি। চট্টগ্রাম অংশে বিশেষ করে লোহাগাড়া-সাতকানিয়া এবং চন্দনাইশ এলাকায় কাজ করতে গেলে ভূমি মালিকদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। চট্টগ্রাম অংশে এক কিলোমিটারের মতো ঘর-বাড়ি পড়েছে। তার উপর রয়েছে মাটির সংকটও।
চট্টগ্রাম দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান জানান, এই প্রকল্পের পুরোটা বিদেশি ফান্ডিং। প্রকল্প কাজের টিম লিডার হচ্ছেন ব্রিটিশ নাগরিক। করোনায় লকডাউন শুরুর সাথে সাথেই সব ব্রিটিশ নাগরিক দেশে ফিরে গেছেন। লকডাউনের কারনে পুরো এপ্রিল মাস কাজ বন্ধ ছিল। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি আরো জানান, জুলাই-আগস্ট মাসে বৃষ্টির কারনে বাইরে কাজ করা যায়না। সব প্রকল্পে জুলাই-আগস্ট মাস কাজ হয় না। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ। কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের শেষের দিকে। করোনা পরিস্থিতি যদি আর না বাড়ে, তাহলে মেয়াদের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারবেন।
প্রকল্পের কক্সবাজারের অংশে মাতামুহুরি নদীসহ বিভিন্ন নদী থেকে মাটি উত্তোলন করা গেলেও মাটির বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম অংশে। সরকার এখন আইন করেছে কোন ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা যাবে না। এই কারনে চট্টগ্রাম অংশে মাটিরও সমস্যা। জমি থেকে মাটি নেয়া যাচ্ছে না। কষ্ট বেশি হলেও বিকল্প ব্যবস্থায় মাটি আনতে হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। যার পুরোটাই এডিবির। প্রথম ধাপে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার সদর পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে কক্সবাজার থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটারে ট্রেন চলবে ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার যেতে সময় লাগবে ১ ঘন্টা ২০মিনিট। তবে এই প্রকল্পের বড় সমস্যা হলো চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী রেল লাইন। এই লাইনের অবস্থা খুবই শোচনীয়।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২৮ কিমি রেলপথে স্টেশন থাকছে ৯টি।
এগুলো হলো- সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও ঘুমধুম।
বহুল প্রতিক্ষিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মানকাজ দ্রুত শেষ করার দাবী জানিয়েছেন জনসাধারণ।