সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দিদারুল হক সিকদারের বাড়ীতে কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণের বিচারের হয়েছে। এমনকি ভিকটিমের পিতাকে উল্টো ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা আগামী সোমবারের মধ্যে পরিশোধেরও নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। গত ৪দিন ধরে থানার মাত্র ৩০০ গজের ভেতরে এমন ঘটনায় বেশ সমালোচনা চলছে। সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এসব অভিযোগ ভিকটিম কিশোরীর পিতা সাহাব উদ্দিনের।
কান্না জড়িত কন্ঠে গণমাধ্যমকে তিনি জানান, কোনাখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের শহর আলী পাড়াস্থ বাড়ি থেকে এক সপ্তাহ পূর্বে তার মেয়ে রামপুরস্থ খালার বাসায় বেড়াতে যান। প্রতিমধ্যে সাহারবিল ইউনিয়নের বাজারের দক্ষিণ পাশের বাসিন্দা লালু নামে এক যুবক তার মেয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। খবর নিয়ে জানতে পারেন, চকরিয়া পৌর শহরের চিরিংগা স্টেশনে একটি বাসায় ৪ দিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়।
সাহাব উদ্দিন আরো জানান, মেয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের বিষয়ে গত ২৩ডিসেম্বর সন্ধ্যায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ভিকটিম কিশোরী ও অভিযুক্তকে কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হকের মাধ্যমে থানায় হাজির করা হয়। ঘটনার সুষ্টু সমাধানের জন্য থানা থেকে চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
ভিকটিম কিশোরীর পিতার অভিযোগ, বিচারের আশ^াসে মেয়েকে থানা সেন্টার এলাকার নিজ বাড়িতে আটকে রাখেন চেয়ারম্যান। বিয়ে দেয়ার চাপ প্রয়োগসহ উল্টো ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা করেন।
ধর্ষণের বিচারের বিষয়ে কোনাখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামশুল আলম জানান, দিদার চেয়ারম্যান জোর করে ছেলে-মেয়ে দুইজনকে ধরে নিয়ে চকরিয়া থানার উত্তর পাশের্^র বাড়ীতে আটকে রেখে ধর্ষণের শালিস বিচার বসিয়েছে। এমনকি আইনীভাবে কোন সহায়তাও পেতে দিচ্ছেনা বলে অভিভাবকের কাছ থেকে শুনেছেন।
অভিযুক্ত কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল হককে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের জানান, ভিকটিমসহ অভিযুক্ত ছেলেকে থানায় ডেকেছিলেন। স্থানীয়ভাবে মিমাংসার কথা বলে উভয়পক্ষকে থানা থেকে নিয়ে যান চেয়ারম্যান।
ধর্ষণের বিচার চেয়ারম্যান করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিচার করতে পারেন। তবে, সুপ্রিম কোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা (নিষেধ) থাকার পরও কিভাবে ধর্ষনের বিচার করেন, এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের।