সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদদাতা:
মুমিনা বেগম (৮),পিতা:মোহাম্মদ ছিদ্দিক,মাতা:রমবাহার বেগম থাকেন ক্যাম্প ৮-ই,ব্লক-বি-৩৭। ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট তার বয়স ছিল মাত্র চার বছরের একটু বেশী। জীবনবাজী রেখে মা-বাবার সাথে মাইলের পর মাইল হেঁটে এসেছিলেন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এই দেশে। মেয়েটির বাবা ক্যাম্পে দিনমজুরের কাজ করেন। ২২ মার্চ কাজে গিয়েছিলেন বাবা আর মা গিয়েছিলেন খাবার পানি সংগ্রহের জন্য। ঘরের বড় মেয়ে হিসেবে ছোট বোনটির দেখাশোনা করার দায়িত্ব ছিল তার। মা চুলায় খাবার দিয়ে গেছেন আর মা ফিরে আসলে এক সাথে খাবেন সে অপেক্ষায় ছিলেন মুমিনা বেগম।
মুমিনা বেগম হঠাৎ দেখতে পান মানুষের ছুটাছুটি আর আগুন। সে আর তার ছোট বোন যার বয়স মাত্র তিন মাস জীবন বাঁচানোর তাগিদে ঘর ছেড়ে বের হয়ে যান। চারপাশে আগুনের লেলিহান শিখা আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। দৌঁড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বার বার হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েছেন আর কোলে তার তিন মাসের ছোট বোনটি।
বালুখালী বাজারের পাশের গ্রামের রাস্তায় বসেছিলেন ছোট বোনটিকে কোলে নিয়ে সারা রাত । রাতের বেলায় মুমিনা কিছু খেতে পেলেও ছোট বোনটি সারারাত কান্না করেছেন পেটের ক্ষুধায়। মায়ের বুকের দুধ খান ছোট বোনটি। কিছুই করার ছিলনা মুুমিনার।
পরের দিন সকাল ১০.০০টায় কোস্ট ফাউন্ডেশনের শিশু সুরক্ষা টিমের সদস্য তানজিয়া এবং সানজিদা খানম নিপা মুুমিনাকে দেখতে পেয়ে তাকে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জ অফিসে নিয়ে যান। ক্যাম্প ইনচার্জ অফিসের সহায়তায় কোস্ট শিশু সরক্ষা টিমের সদস্যরা মুমিনা এবং তার বোনটিকে মায়ের হাতে তোলে দেন।
২২ মার্চ রাতে সবার আগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন স্থানীয়রা এবং স্থানীয় এনজিও গুলো। আমরা মানবিক, মানবিকতায় আমাদের বড় পরিচয়। আবার ও প্রমানিত হলো ‘‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’’