শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার টাইমস২৪:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ‘সুগন্ধা পয়েন্ট’ যার হোটেলের নামে নামকরণ সেই সুগন্ধা গেস্ট হাউসের মালিক নাগু কোম্পানি মারা গেলেন কিছুদিন আগে।
দরিয়া নগরের নাম কম বেশি সবাই জানতেন। সেই দরিয়া নগরকে একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তোলা পর্যটন উদ্যোক্তা আবু সায়েম ডালিম চিরবিদায় নিলেন আজকে৷
কক্সবাজারে যেই মানুষটি বজ্র কণ্ঠে আওয়াজ দিতো, সারাদিন যার বাসা ও অফিসের সামনে শত শত মানুষের ভীড় থাকতো সেই মেয়র মুজিবুর রহমান হাসপাতালের আইসোলেশন বেডে৷
বিমান বন্দর সড়কের মৎস্য ব্যবসায়ী জয়নাল কোম্পানি ও টগবগে যুবক মোহাম্মদ করিম হঠাৎ চোখের সামনে ‘নাই’ হয়ে গেলো। করোনার ভয়াল থাবা নিমিষেই তাদের পৃথিবী থেকে বিদায় দিলো৷
জানেন- নাগু কোম্পানি কতো টাকার মালিক? কোটি কোটি টাকার মালিক তিনি৷ কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতে পরকালে চলে গেলেন। এখানে করোনা একটা উছিলা মাত্র।
করোনা যুদ্ধে ডালিমের সচেতনতার কথা শুনলে আঁতকে উঠবেন। ওনার সন্তানরা গরুর মাংস খাওয়ার বাহানা করেছিলো লকডাউনের মাঝে৷ চুরি করে বাজারে গিয়ে যখন মাংস বিক্রেতার দোকানে ভীড় দেখলো, দূর থেকে সেটি ছবি তুলে বাসায় এসেছিলেন আর সন্তানদের সেই ছবি দেখিয়ে বলেছিলেন, বেঁচে থাকলে অনেক মাংস খেতে পারবে৷
শেষ সময়ের সংগ্রামের কথা শুনলে অবাক হবেন। তার করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পেয়ে নিজেই চেয়েছিলেন আইসিইউ’তে যেতে। রামু আইসোলেশন থেকে হাই স্পিড অক্সিজেনের জন্য উখিয়া আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো৷ তিন দিনের মাথায় ঢাকায় ব্যবস্থাও হয়েছিলো আইসিইউ। কিন্তু ডালিমের মতো এতো সচেতন মানুষটাও করোনার যুদ্ধে হেরে গেলেন। ঢাকায় যাওয়ার এ্যাম্বুলেন্সে উঠার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন৷
তাহলে আমরা কোথায় আছি…কি করছি?
নিশ্চয় আমরা ডালিমের চেয়ে সচেতন নই। তাহলে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।
ভেবেছেন একবার?
সময় থাকতে সাবধান হোন। পরিস্থিতি ভয়ানক হচ্ছে। প্রাণের কক্সবাজার ভালো নেই। মৃত্যুর মিছিলে আপনি আমি যেনো সারথি না হই। আপনার নিজের জীবন আর পরিবারের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ঘরে থাকুন।
মনে রাখবেন- আপনার মৃত্যুকে সরকার সংখ্যা হিসেবে বিবেচনা করে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। কিন্তু আপনার মৃত্যু যেনো আপনার উপর নির্ভরশীলদের সারাজীবনের কান্না না হয়।
এই মুহুর্তে…
আপনার মুখের মাস্ক একটি ভেন্টিলেটরের চেয়ে মূল্যবান। আপনার বাসা আইসিইউ’র চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসার চেয়েও প্রতিরোধ জরুরি।
আর হ্যা- এটা কারফিউ নয়, এটা হলো কেয়ার ফর ইউ।
মইন উদ্দীন
হোম আইসোলেশন থেকে
৫ জুন -২০২০
নোটঃ
মঈন উদ্দিন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগের সভাপতি ও কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়ার বাসিন্দা।
গত ২৮ মে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর থেকে হোম আইসোলেশনে আছেন। এখন অনেকটা সুস্থতার পথে।