রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার টাইমস২৪
কোটাবিরোধীদের আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কক্সবাজার। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যা নাগাদ শহরের প্রবেশদ্বার লিংক রোড, কক্সবাজার সরকারি কলেজ গেট এলাকাসহ বেশ কিছু পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তবে পুলিশ ও ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়ে আন্দোলনকারীরা। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের চার নেতাকর্মীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লিংকরোড ও কক্সবাজার সরকারি কলেজের গেইট এলাকায় কোটাবিরোধীরা প্রথম বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এতে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ বাধা দিতে গেলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিকেলে শহরের লালদীঘির পাড় থেকে গুণগাছতলাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করে কোটা আন্দোলনকারীরা।
মিছিলের এক পর্যায়ে লালদীঘির পাড়স্থ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়।
এসময় কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক বাজিবুল ইসলাম মোস্তাকসহ ছাত্রলীগের ৪ নেতা আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টায় মিছিল করে কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী কোটা আন্দোলনকারীরা মিছিল সহকারে অবস্থান নেয় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লিংকরোডে। তারা সেখানে স্লোগান দিয়ে অবস্থান নেয়। পুলিশ তাদের কে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা সরেনি। এসময় সড়কে চলাচলকারি কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে তারা। এই সময় কক্সবাজার সরকারি কলেজ গেইটে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে কোটা আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে লিংক রোড থেকে কক্সবাজার সরকারি কলেজের দিকে যায়। এসময় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। কলেজের গেইটে ভাঙচুর করা হয় কয়েকটি মোটর সাইকেল।
পরে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এসময় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
এর ঘটনার পর কিছুক্ষণ আন্দোলন বন্ধ থাকলেও দুপুর আড়াইটার পরে মিছিল সহকারে আন্দোলনকারীরা আবারও অবস্থান নেয়। লিংক রোডস্থ কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ওখানে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। এর ঘন্টা দুয়েক পর বিকাল ৪ টার দিকে শহরের ঝাউতলা এলাকায় মিছিল সহকারে দেখা মিলে আন্দোলনকারীদের। হাতে লাঠিসহ ইটপাটকেল নিয়ে আন্দোলনকারীরা মিছিল সহকারে প্রধান সড়কে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর চালিয়ে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়া এলাকায় যায়। ওখান অবস্থিত কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ, জেলা জাসদ, জাতীয় পার্টির কার্যালয় এবং আশে-পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালানো হয়।
এরপর আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে পৌঁছে। বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে পুলিশের একটি দল আন্দোলনকারিদের সরিয়ে দেয়।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, কোটা আন্দোলনকারিদের পক্ষে মিছিল সহকারে শহরে নাশকতা চালানো হয়েছে। মিছিলে অংশ গ্রহণকারীরা শিক্ষার্থী না। এদের হাতে লাঠি, লোহারড, ইটপাটকেল ও ধারালো অস্ত্র ছিল।
আহত ছাত্রলীগ নেতা মইন উদ্দিন জানিয়েছেন, এটা কোটা আন্দোলন ছিল না। শিবির ও ছাত্রদলের কিছু সংখ্যক লোকজন এই হামলা, ভাংচুর ও মারধর সংঘটিত করেছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রকিবুজ্জামান বলেন, আন্দোলনকারিরা মিছিল সহকারে কয়েকটি স্থানে ভাংচুর ও কয়েকজনকে মারধর করেছে। তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। কারা ভাংচুর ও মারধর করেছে তাদের ভিডিও, ছবি পাওয়া গেছে। তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।