সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যাচারের জবাব দিলেন যুবদল নেতা জাবেদ ইকবাল লবণ আমদানির চক্রান্ত রুখতে হবে বিসিক কক্সবাজারে পাঁচদিনব্যাপী শিল্পোদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র ভর্তি ফি’তে ৫০ শতাংশ ছাড়সহ শতভাগ স্কলারশিপ প্রকাশিত সংবাদে আহমদ কবিরের প্রতিবাদ অবসরপ্রাপ্ত সেক্রেটারি রশিদ আহমদের চিংড়ি প্রজেক্ট জবরদখলের অভিযোগ কক্সবাজার শহরে তারেক বাহিনী সক্রিয়, সশস্ত্র মহড়া ভারুয়াখালীতে চিংড়ি প্রজেক্ট দখলে নিতে সশস্ত্র হামলায় আহত ২, লুটপাট ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি স্বেচ্ছাসেবক দল ফতেখারকুল শাখার ৭ সদস্যের কমিটি অনুমোদন

উচ্ছেদ আতঙ্কে বৃহত্তর মুহুরীপাড়ার ৫ শতাধিক পরিবার

বার্তা কক্ষ / ২৬২ বার পড়ছে
আপলোড : সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন

সংবাদদাতা:
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বসবাসকারি কক্সবাজার শহরতলির বৃহত্তর মুহুরীপাড়ার ৫ শতাধিক পরিবার উচ্ছেদ আতঙ্কে পড়েছেন। এরা সকলেই বাঁকখালী নদীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে এই এলাকায় বসতি গড়েছিলেন।

এলাকাবাসির অভিযোগ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের নোটিশ কিংবা ঘোষণা ছাড়াই ওই জমির জরিপ করতে শুরু করায় এলাকার অধিবাসিদের মধ্যে উচ্ছেদ আতঙ্ক ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

তারা মনে করছেন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আবাসিক ফ্ল্যাট উন্নয়ন প্রকল্পের নামে সাধারণ মানুষের বসবাসের জমি দখল করতে চাইছে।

এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কউকের কর্মকর্তারা ওই এলাকায় জরিপ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়েছেন।

স্থানীয় অধিবাসীদের মতে, কক্সবাজার শহরতলির লিংক রোড এলাকার অনতিদূরে দক্ষিণ মুহুরী পাড়ায় (বিসিক এলাকা) দীর্ঘ প্রায় ৪ দশক ধরে বসবাস করছে ৫ শতাধিক পরিবার। এখানে সরকারি সবধরণের সুযোগ সুবিধা, যেমন- বিদ্যুতায়ন, সড়ক উন্নয়ন ও ঝিলংজা ইউনিয়ন অধিভূক্ত ওয়ার্ড হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে।

তাদের মতে, ওই সব পরিবার কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ভাঙ্গনসহ বিভিন্ন সময়ে দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে উদ্বাস্তু হিসেবে দক্ষিণ মুহুরী পাড়ায় বসতি গড়েছেন। মানুষের ৫টি মৌলিক অধিবারের একটি বাসস্থান পাওয়ার অধিকার হিসেবে এই এলাকায় বসতি গড়ে নগরায়ন করে তুলেছেন।

তাদের অভিযোগ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের যাচাই-বাছাই ছাড়া এলাকায় বসবাসকারি হাজার হাজার মানুষের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ কিংবা সমন্বয় না করে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ প্রবাদের মতো সাধারণ মানুষের বাসস্থান দখল করে বিত্তবানদের জন্য ফ্ল্যাট বানাতে চাইছে।

তাদের মতে, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জরিপ ও অন্যান্য তথ্য মতে ওই এলাকায় ২১০ একর জমি দখলে নিতে চায় তারা। ওই জমিতে শুধু সাধারণ মানুষের বসতি আছে তা-ই নয়, এখানে রয়েছে বড় বড় পাহাড়, ঝিরি ও হাতির ডেরা। এসব ধ্বংস করে নিজেদের সুবিধার জন্য সাধারণ মানুষের বসতি দখল করতে চাইছে কউক।

সুত্র মতে, সম্প্রতি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি দল পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মুহুরী পাড়ায় গিয়ে জমির জরিপ নেয়া শুরু করে। এসব দেখে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে কউক কর্মকর্তাদের সাথে সাধারণ অধিবাসীরা কথা বলতে চাইলে তারা স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।

স্থানীয়দের মতে, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যেভাবে সাধারণ মানুষের বসতি দখল করে ফ্ল্যাট করতে চাইছে তাতে সরকারি এই সংস্থাটির সাথে সাধারণ মানুষের সাংঘর্ষিক দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।

তাদের মতে, যে জমি অধিগ্রহণ করতে চাইছে তাতে মাত্রই কয়েক একর জমি রয়েছে বসবাস যোগ্য, অবশিষ্ট সব জমিই গহীন পাহাড়, ঝিরি ও হাতিদের অভয়ারণ্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অধিবাসি বলেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গারা যদি বাংলাদেশের জমিতে এসে বসবাস করতে পারে, সেখানে বাংলাদেশি অধিবাসি হয়ে কেন উচ্ছেদের শিকার হবেন তারা!

তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গিকার হলো, প্রত্যেক মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করা। সেখানে কউক প্রধানমন্ত্রীর নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সাধারণ মানুষের বসতি উচ্ছেদ করে বিত্তবানদের জন্য ফ্ল্যাট বানাতে চাইছে।

কক্সবাজারে কর্মরত পরিবেশবাদী সংগঠনের মতে, পাহাড় দখল ও নিধন করে যদি কউক আবাসন প্রকল্প করতে চায়, তাহলে তা হবে পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপর্যয়। এই এলাকার জীব-বৈচিত্রও ধ্বংস হয়ে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে বিস্তীর্ণ পাহাড়।

শহরতলির বৃহত্তর মুহুরীপাড়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর নীতিবিরোধী ও পরিবেশ বিধ্বংসী প্রকল্প থেকে সরে আসার জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। অন্যথায় নিজেদের বাসস্থান রক্ষায় আন্দোলন ও আইনগত পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

তবে এ ব্যাপারে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।