রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পরিদর্শনে চট্টগ্রামের সমন্বয়ক টিম বন্যাদূর্গত পরিবারে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আর্থিক সহায়তা ফেনীতে বন্যার্তদের জন্য কমিউনিটি রান্নাঘর চালু করে ২৩ হাজার গরম খাবার দিল কোস্ট ফাউন্ডেশন ইলিয়াছ মিয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ পান বাজার রোডে এশিয়া ফার্মেসি উদ্বোধন বৈষম্যমুক্ত কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি ও এম আর পি বাস্তবায়ন চান ওষুধ ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি দখলবাজদের আইনের কাঠগড়ায় হাজির করা হবে কক্সবাজারে কোস্টের নারী নেটওয়ার্কিং কমিটির নেতৃত্ব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ বিশ্ব মানবিক দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভা সাবেক সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে কক্সবাজারে আবাসিক হোটেল দখলের অভিযোগ

সমুদ্রসৈকতে ভেসে এলো বৃহদাকার মাছ

বার্তা কক্ষ / ২৭৬ বার পড়ছে
আপলোড : রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

কক্সবাজার টাইমস২৪
কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সমুদ্রসৈকতে একটি বৃহদাকার মাছ পাওয়া গেছে। কোনও নড়াচড়া না থাকায় সেটিকে মৃত বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় জেলেরা। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি ডলফিন। তবে স্থানীয়রা বলাবলি করছেন, এটি তিমির বাচ্চা হতে পারে। মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, পরীক্ষার পর তারা মাছটির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবে।

সোমবার (২২ জুন) সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া সমুদ্রে এই মাছটি দেখে লোকজন ভিড় করেন। এটিকে ‘হাম্পব্যাক’ প্রজাতির ডলফিন বলছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত ৩ ও ৪ এপ্রিল টেকনাফ উপকূলে ভেসে আসে অন্তত দুটি ডলফিনের মৃতদেহ।

সর্বশেষ ভেসে আসা মাছটির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. এহসানুল করিম বলেন, ‘এটি ইন্দো-প্যাসিফিক বোতল নাক (হাম্পব্যাক) ডলফিন নামে পরিচিত। এই প্রজাতিগুলো দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, খাবারের সন্ধানে দলছুট হয়ে ডলফিন মাছটি টেকনাফের কাছাকাছি এসেছে এবং আঘাত পেয়ে মারা গেছে।’

তিনি বলেন, ‘৯-১০ ফুট দীর্ঘ এই মাছটির ওজন ১৬০ কেজি হতে পারে। মূলত এই মাছগুলো ভারত এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্রান্তীয় জলে পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ সাধারণ বোতলজাতীয় ডলফিনের বিপরীতে এই ডলফিনগুলো অগভীর, উপকূলীয় জল পছন্দ করে। ফলে এ মাছ আশপাশের অঞ্চলে দেখা অস্বাভাবিক কিছু নয়। পরিবেশবাদীরা জানান, ডলফিন খাবারের জন্য মাছের পালের পেছনে থাকে। জেলেরাও বিষয়টা জানেন। মাছ ধরার জন্য জেলেরা সাগরের ডলফিনের চারপাশে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন। এ সময় জালে আটকা পড়ে ডলফিনগুলো মারা যায়।’

মাছটি দেখতে অনেকটা তিমির মতো। এটি তিমি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে ড. এহসানুল করিম জানান, ‘এটি সম্ভবত ডলফিনই। এই এলাকায় তিমি খুব একটা দেখা যায় না। ২০০৯ সালে এই উপকূলে সর্বশেষ তিমি দেখা গেছে। দলছুট হয়ে তিমি চলে এসেছিল তখন। এরপর ২০১৭ সালে একবার তিমি প্রজাতির মাছ দেখা যায় এই এলাকায়। তবে এটি তিমিই কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আরও ভালো করে খোঁজ নিতে হবে।’

তবে, মাছটির ছবি দেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, ‘এটি ব্রাইটাল তিমি। এগুলো বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে থাকে। এটা বাচ্ছা থেকে একটু বড় সাইজের।’

তিনি বলেছেন, ‘কীভাবে এটি মারা গেছে তা ময়নাতদন্ত করার পর বলা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, গভীর সমুদ্রে ফিশিং জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মারা যেতে পারে। ধাক্কা খেয়ে আঘাত পেয়ে এটি ঢেউয়ের সঙ্গে উপকূলে চলে আসে।’

স্থানীয় সাংবাদিক মো. জাকারিয়া আলফাজ জানান, সোমবার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সমুদ্রসৈকতে একটি মৃত বৃহদাকার মাছের দেখা মেলে। এ সময় সেটি দেখতে লোকজন ভিড় করে। অনেককে আবার ছবি তুলতে দেখা গেছে। দুপুর ১টা পর্যন্ত মাছটি সেখানে পড়ে ছিল। তবে আগের দিন সেখানে আরও একটি রক্তাক্ত প্রজাতির মাছ দেখে স্থানীয় জেলেরা সেটিকে গভীর সাগরে দিয়ে আসেন। এখন সেই মাছটি মারা গেছে কিনা সন্দেহ আছে।

কক্সবাজারের পরিবেশ-বিষয়ক সংস্থা ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) প্রধান নির্বাহী এম ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, ‘এ সময়ে ডলফিন মারা যাওয়ার কথা না। হয়তো পানি দূষণ অথবা জেলেদের জালে আটকা পড়ে মারা গেছে। এসব ডলফিন রক্ষার্থে জেলেদের সচেতনতা এবং পানির দূষণ কমানো দরকার।’

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নুরুল আমিন জানান, ‘আমার এলাকায় সৈকতে একটি বিশাল আকৃতির মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। আবার অনেকে সেটিকে তিমি মাছও বলছে। এই সময়ে সাগরে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ। কিন্তু কীভাবে মাছটি মারা গেলে বলা মুশকিল। তবে মাছের গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। মাছটি মাটিচাপা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’

টেকনাফ উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, ‘একটি বড় প্রজাতির মাছের মৃতদেহের বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।’

এ বিষয়ে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দিপক বিশ্বাস বলেন, সোমবার সকালে মৃত একটি বিশাল আকৃতির মাছ ভেসে এসেছে। স্থানীয়দের সহায়তায় সেটির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।