রেজাউল করিম চৌধুরী:
আজ আমি ভাসানচর বিষয়ে জাতিসংঘের একটি বিবৃতি দেখলাম, সেখানে ভাসানচরে স্থানান্তর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গাদের ইচ্ছা এবং মতামতকে প্রাধান্য দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে দ্বীপটিতে একটি বিশেষজ্ঞ দলের পরিদর্শন আয়োজনের আহবান জানিয়েছে এবং তারা একথাটি পুনর্ব্যক্ত করেছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কাজটি করতে গিয়ে আমাদের সরকারের সংকটের বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উপর চাপ কমানোর ক্ষেত্রে সরকারের সীমিত বিকল্প থাকাটাও আমরা অনুধাবন করতে পারি। তাছাড়া সরকার ইতিমধ্যে ভাসানচরের প্রকল্পটির জন্য প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে।
তবে এটাও সত্য যে, আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছি, যা দেশের জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়ার উপায় হিসেবে রূপান্তরিত হতে পারে। জাতিসংঘে আমাদের একটি বিশাল শান্তিরক্ষী বাহিনী রয়েছে, তারা আমাদের জন্য সুনাম যেমন বয়ে আনছেন, আবার তারা বিশাল পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করছেন। আমাদের পোশাকের ৮০% ইউরোপীয় বাজারে যায়। প্রত্যাবাসনের মতো স্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় দেশগুলির সমর্থন প্রয়োজন।
শরণার্থীর বিষয়ে দেখভাল করার জন্য আন্তঃসরকারীভাবে জাতিসঙ্ঘ থেকে ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত একটি সংস্থা UNHCR. কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পই হোক বা ভাসানচর, খাদ্য এবং অন্যান্য সমস্ত সহায়তার জন্য আমাদের জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সহায়তা প্রয়োজন। আমাদের জাতীয় অর্থ থেকে এই ব্যয় পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব। আমি মনে করি, সরকারের হিসাব করা উচিত কী ধরনের বা কী পরিমাণ ঝুঁকি আমরা নিতে পারবো। সরকার এবং জাতিসংঘ উভয়েরই উচিত এই বিষয়ে সংলাপে বসে ইতিবাচক সমাধানের সন্ধান করা।
-রেজাউল করিম চৌধুরী
নির্বাহী পরিচালক, কোস্ট ট্রাস্ট।
Leave a Reply